আয়কর রেয়াত পাবেন ডাক জীবন বীমায়

আয়কর রিটার্ন দাখিল করার আগেই একজন ব্যক্তি করদাতাকে  জানতে  হবে কিভাবে আয়কর রেয়াত পাওয়া যায়। তাহলে অতিরিক্ত কর প্রদান থেকে রক্ষা পেতে পারেন। আজ আলোচনা করবো ডাক জীবন বীমাসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করে  কিভাবে আপনি আয়কর রেয়াত পেতে পারেন।

আয়কর আইন ২০২৩ এর ষষ্ঠ তফসিলের অংশ-৩ এ কররেয়াত যোগ্য বিনিয়োগ ও অনুদানের খাতের তালিকা দেওয়া হয়েছে।  সে তালিকা অনুযায়ী ডাক জীবন বীমাসহ সকল বীমায় বিনিয়োগের মাধ্যমে ব্যক্তি করদাতা আয়কর রেয়াত পেতে পারেন। করদাতাকে কর রেয়াতের সুবিধা নিতে হলে নিন্মোক্ত খাতসমূহের ভিতর সুবিধামতো এক বা একাধিক খাতে বিনিয়োগ করতে হবে।  করযোগ্য বিনিয়োগ ও অনুদানে খাতগুলো সমূহ নিম্নে উল্লেখ করা হলো:

আয়কর রেয়াত

  • জীবন বীমা প্রিমিয়াম (বাৎসরিক মোট বীমাকৃত অংকের সর্বোচ্চ ১০%)
  • সরকারী কর্মকর্তার প্রভিডেন্ট ফান্ডে চাঁদা
  • Provident Fund Act, 1925 (Act No. 19 of 1925) এর বিধানবলি প্রযোজ্য এইরুপ যেকোন তহবিলে করদাতার চাঁদা
  • স্বীকৃত ভবিষ্যত তহবিলে নিয়োগকর্তা ও কর্মকর্তার চাঁদা
  • অনুমোদিত বার্ধক্য তহবিলে করদাতার বার্ষিক সাধারণ চাঁদা
  • কল্যাণ তহবিল ও গোষ্ঠী বীমা তহবিলে চাঁদা
  • অনধিক ৫ লক্ষ টাকার কোন সরকারী সিকিউরিটিজ যথা সরকার কর্তৃক ইস্যুকৃত ট্রেজারি বিল, বন্ড, সঞ্চয়পত্র, ঋণপত্র, সুকুক বা শরীয়াহ ভিত্তিক ইস্যুকৃত সিকিউরিটি বা অনুরূপ দলিল ক্রয়
  • কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা ইনজেন্টসে্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ বা সম্পদ ব্যবস্থাপক বা ফান্ড ম্যানেজার কর্তৃক ইস্যুকৃত ইউনিট সার্টিফিকেট এবং মিউচুয়াল ফান্ড, ইটিএফ বা যৌথ বিনিমোগ স্কিম ইউনিট সার্টিফিকেট অনধিক ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ
  • যেকোন তফসিলি ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ডিপোজিট পেনশন স্কীমে বাৎসরিক সর্বোচ্চ ১,২০,০০০ টাকা বিনিয়োগ
  • পুঁজি বাজারে নিবন্ধিত কোন শেয়ার, মিউচ্যুয়াল ফান্ড অথবা ডিবেঞ্চার এ বিনিয়োগ
  • জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত কোন দাতব্য হাসপাতালে দান
  • সমাজ কল্যাণ অধিদপ্তর এবং বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে স্থাপিত প্রতিষ্ঠানে দান
  • জাতীর জনকের স্মৃতি রক্ষার্থে নিয়োজিত জাতীয় পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানে অনুদান
  • যাকাত তহবিল ব্যবস্থাপনা আইন ২০২৩ দ্বারা বা ইহার অধীন প্রতিষ্ঠিত কোন দাতব্য প্রতিষ্ঠানে দান
  • সরকার কর্তৃক অনুমোদিত জনকল্যানমূলক বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দান
  • মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি রক্ষার্থে নিয়োজিত জাতীয় পর্যায়ের কোন প্রতিষ্ঠানে অনুদান

আয়কর রেয়াত

কখন বিনিয়োগ করলে আয়কর রেয়াত পাবেন?

অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগে কখন বিনিয়োগ করতে হয়? উত্তর হচেছ কোন স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতা উপরে ‍উল্লেখিত খাতসমূহে বিনিয়োগ করে যদি আয়কর রেয়াত পেতে চান তাহলে, তাকে অবশ্যই  কাঙ্ক্ষিত করবর্ষের অর্থবৎসরে বিনিয়োগ করতে হবে। অর্থ্যাৎ যে করবর্ষে কর রেয়াত সুবিধা নিতে চান, সেই করবর্ষের অর্থবছরে বিনেয়োগ করতে হবে। উদাহারণ হিসেবে বলতে পারি কোন স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতা যদি করবর্ষ ২০২৩-২০২৪ এ আয়কর রিটার্নে কর রেয়াত নিতে চান, তাহলে তাকে অবশ্যই উক্ত কর বৎসরের অর্থবৎসর অর্থ্যাৎ ১লা জুলাই ২০২২ থেকে ৩০শে জুন ২০২৩ এর ভিতর কররেয়াতযোগ্য বিনিয়োগ খাতে বিনিয়োগ করতে হবে।

অর্থ্যাৎ, যে বৎসরে আপনি এই কর রেয়াতের সুবিধা নিতে চান তার আগের বৎসরের ১লা ‍জুলাই থেকে ‍উক্ত বৎসরের ৩০শে জুন পর্যন্ত সময়ের ভিতর এই বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।

কর রেয়াত পেতে এসব খাতে একজন করদাতা বছরের মোট আয়ের ২৫ শতাংশ পর্যন্ত বিনিয়োগ বা দান করতে পারবেন। এর বেশি করলে অতিরিক্ত অংশের কর রেয়াত মিলবে না। ওই বিনিয়োগকারী বা দানশীল করদাতার বার্ষিক আয় ১৫ লাখ টাকার কম হলে মোট বিনিয়োগ ও দানের ১৫ শতাংশ কর ছাড় মিলবে। ১৫ লাখ টাকার বেশি হলে ১০ শতাংশ হারে কর ছাড় পাওয়া যাবে। কর রেয়াত নিতে হলে রিটার্ন ফরমের সঙ্গে ২৪ডি তফসিল ফরম পূরণ করতে হবে। সেখানে বিনিয়োগ বা দানের বিষয়গুলো উল্লেখ করতে হবে। ওই ফরমটি পূরণ করে বার্ষিক রিটার্নে সংযুক্ত করতে হবে। এর পাশাপাশি বিনিয়োগ বা দানের প্রমাণপত্রও দিতে হবে।

 

ডাক জীবন বীমাসহ ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক সংক্রান্ত যেকোন তথ্যের জন্য যোগযোগ করতে পারেন আমার সাথে। যোগাযোগের ঠিকানা:

মো. রাসেল মিয়া 
পোস্টাল অপারেটর 
নারায়ণগঞ্জ প্রধান ডাকঘর
নারায়ণগঞ্জ-১৪০০।
মেইল: r.osman85@gmail.com

Like Our Facebook Page: English with Rasel

Join Our Facebook Group: English with Rasel

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top